সর্বশেষ
মিটফোর্ড এলাকায় সোহাগ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নান্নু গ্রেফতার
সম্পূর্ণ নিউজ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অর্ধশত গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
আমার কোনো অনুমতি ছাড়াই এটা করা হয়েছে : গাছ কাটা প্রসঙ্গে জাবি উপাচার্য
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের জন্য ৫০টির বেশি গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) সকালে বিশ্ববিদ্যলয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ভবনের সামনের নির্ধারিত ওই স্থানে এস্কেভেটর দিয়ে গাছগুলো উপড়ে ফেলেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, তাদের অনুমতি ছাড়াই গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে।
গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অবস্থান দেখা গেছে। ক্লাস, পরীক্ষা, ল্যাব ও গবেষণা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার প্রয়োজন তুলে ধরে ওই স্থানে ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও গণিত ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি আবু রুম্মান বলেন, আমরা প্রথমত গাছ কাটার বিপক্ষে। তবে আমাদের বিভাগের শ্রেণিকক্ষ সংকট, ল্যাব সংকট, শিক্ষকদের বসার জায়গা ও আমাদের চলাচলেরও জায়গা নেই। সেহেতু আমাদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম গতিশীল রাখতে আমাদের ভবন দরকার। সে জায়গা থেকে পরিবেশের ন্যুনতম ক্ষতি করে হলেও আমাদের ভবন দরকার।
তবে দীর্ঘদিন ধরে মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া এভাবে যত্রতত্র ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছে আরেক দল শিক্ষার্থী। তারা বলছে, লেকচার থিয়েটারে সব একাডেমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গাছ কেটে সব বিভাগের আলাদা ভবন চাওয়া অযৌক্তিক। মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।
ভবন নির্মানের ঠিকাদার মাহবুব ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক আব্দুল আজিজের ভাষ্য, কয়েকদিন আগে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আবু রুম্মান তাকে ফোন করে বলেছে কাজ শুরু করতে পারেন। সে জন্যই তিনি গাছ কেটে ভবনের কাজ শুরু করেছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে আবু রুম্মান বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি, কিন্তু এসব আলোচনা থেকে কার্যকর কোনো সমাধান আসেনি। গত ২৩ মার্চ এক বৈঠকে উপাচার্য মৌখিকভাবে কাজ শুরু করার সম্মতি দেন। তাই রবিবার (২৯ জুন) বিকেলে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী নিয়ে আমরা মাহবুব ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপকের সঙ্গে দেখা করি এবং তাকে নির্মাণকাজ শুরু করার অনুরোধ জানাই।'
তবে কোনো শিক্ষার্থী প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক অনুমতি ছাড়া কোনো ঠিকাদারকে কাজ শুরু করতে বলতে পারে কিনা, জানতে চাইলে রুম্মান সরাসরি কোনো উত্তর দেননি। তিনি শুধু বলেন, 'আমি মনে করি না, তারা শুধুমাত্র আমাদের অনুরোধের ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছে।'
আবু রুম্মান আরও বলেন, ‘আমরা প্রথমত গাছ কাটার বিপক্ষে। তবে আমাদের বিভাগের শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব–সংকট, শিক্ষকদের বসার জায়গা নেই, আমাদের চলাচলেরও জায়গা নেই। আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম গতিশীল রাখতে ভবন দরকার। সেই জায়গা থেকে পরিবেশের ন্যূনতম ক্ষতি করে হলেও আমাদের ভবন দরকার।’
এদিকে গাছ কাটার খবর পেয়ে সেখানে ছুঁটে যান ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট ও সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা। তারা গাছ কাটার প্রতিবাদ জানান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান ও অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) নাসির উদ্দীনসহ কয়েকজন শিক্ষকও ঘটনাস্থলে যান। এ সময় শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের জবাবে তারা জানান, কার অনুমতি নিয়ে গাছ কাটা হয়েছে, তারা জানেন না। পরে উপাচার্যের নির্দেশে গাছ উপড়ে ফেলা বন্ধ করা হয়।
উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, 'এতগুলো গাছ কাটা হয়েছে, আমি সেটা আগে জানতাম না। আমার কোনো অনুমতি ছাড়াই এটা করা হয়েছে।'
প্রকল্প পরিচালকও যদি বলেন, 'তিনি গাছ কাটার বিষয়ে জানতেন না। তাহলে এটা কীভাবে হলো, আমি বুঝতে পারছি না। আমরা আগেই জানিয়েছিলাম, মাস্টারপ্ল্যান দৃশ্যমান না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্মাণকাজ চলবে না। সেই প্রক্রিয়া এখনও চলমান। আমরা শিগগিরই মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য দরপত্র আহ্বান করবো।'
গাছ উপড়ে ফেলার প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ‘জাহাঙ্গীরনগর বাঁচাও আন্দোলন’–এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের সামনে (যেখানে গাছগুলো উপড়ে ফেলা হয়েছে) গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূর-এ তামিম বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের পরবর্তী বাংলাদেশে আমাদের আশা ছিল, নতুন যে প্রশাসন আসবে, সেই প্রশাসন একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যূনতম যে প্রয়োজন একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান, ন্যূনতম আবাসিক মাস্টারপ্লান প্রণয়ন করবে। অভ্যুত্থান–পরবর্তী প্রশাসনকে আমরা একরাশ আশা নিয়ে দফায় দফায়, অসংখ্য চিঠি দিয়েছি। কিন্তু আমাদের চিঠিকে পাত্তা দেওয়া হয়নি। আইবিএ ভবনের গাছ কাটার সময় সাবেক ভিসিও বলেছিলেন তিনি জানেন না। বর্তমান ভিসি তখন বলেছিলেন, “ক্যাম্পাসে যদি একটা গাছের পাতাও পড়ে, সেটি ভিসির অগোচরে পড়তে পারে না।”’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২টি স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। ওই প্রকল্পের আওতায় ১০ তলাবিশিষ্ট ছয়টি নতুন হল নির্মাণ করা শেষ। এসব স্থাপনা করতে গিয়ে এপর্যন্ত কয়েক হাজারের বেশি গাছ কাটা হয়ে গেছে। এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেনি।
ক্যাম্পাস
১৫ জুলাই জাবির কালরাত্রি : বহিরাগত নিয়ে ছাত্রলীগের হামলা ও পুলিশের গুলি, প্রথম ছাত্রলীগ মুক্ত ক্যাম্পাস
ক্যাম্পাস
জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলনের ধারা বদলে যায় মালিহার ফেসবুক লাইভে
ক্যাম্পাস
জাবিতে ‘জুলাই উইমেন্স ডে’ পালিত
ক্যাম্পাস
জাবিতে জুলাই আন্দোলনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হামলার এক বছর, বিচার হয় নি এখনও
ক্যাম্পাস
ঢাবির জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
ক্যাম্পাস
৩ দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ক্যাম্পাস
কক্সবাজার সৈকতে নেমে চবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, নিখোঁজ ২
ক্যাম্পাস
জাবি দর্শন এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাধারণ সম্পাদক মতলুবর রহমান রাসেল
ক্যাম্পাস
আমার কোনো অনুমতি ছাড়াই এটা করা হয়েছে : গাছ কাটা প্রসঙ্গে জাবি উপাচার্য
ক্যাম্পাস
১ জুলাই থেকে 'জুলাই শহিদ স্মৃতি শিক্ষাবৃত্তি' চালু করবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়