সর্বশেষ
মিটফোর্ড এলাকায় সোহাগ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নান্নু গ্রেফতার
সম্পূর্ণ নিউজ
সাতকানিয়ায় এক শিক্ষককে দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় স্কুলশিক্ষককে খুঁটিতে বেঁধে মারধর, গ্রেফতার ২
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আবদুর রহমান নামে হাই স্কুলের এক প্রধান শিক্ষককে দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে জনসম্মুখে বেঁধে রেখে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগে দুই ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতার দু’জন হলেন—আব্দুল হান্নান (৪১) ও আবু বক্কর (৫৫)। তারা উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত শামসুল ইসলামের ছেলে। এদের মধ্যে হান্নান সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নাজির হিসেবে কর্মরত।
রবিবার (২৯ জুন) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী রোকসানা আক্তার বাদি হয়ে রবিবার বিকালে সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
আব্দুল হান্নান ও আবু বক্কর ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন— আব্দুল হান্নান ও আবু বক্করের সহোদর মো. হানিফ (৪৫), মো. সোহাগ (৪৩) ও মোহাম্মদ ইকবাল (৩৮), আবু বক্করের ছেলে মুসলিম উদ্দিন হিরু (২৬) এবং ৬-৭ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
হামলার শিকার শিক্ষকের নাম আব্দুর রহমান। তিনি বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের ভাগ্যকুল কদুখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বুচির পাড়ার বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেলের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।
মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও শনিবার (২৮ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে শিক্ষক আবদুর রহমান পরিবারের সঙ্গে আবু বক্করের পরিবারের জায়গা সংক্রান্ত একটি বিরোধ ছিল। সেসময় সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা হয়। এরপর শিক্ষক আবদুর রহমানের ভাই-বোনরা আবু বক্করের পরিবারের কাছে কিছু জায়গা বিক্রি করেছিল। কিন্তু শিক্ষক আবদুর রহমান তার অংশ বিক্রি করেননি।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে শিক্ষক আবদুর রহমানকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের দস্তিদার হাট বাজারের একটি দোকানে ডেকে নিয়ে যান অভিযুক্ত মো. হানিফ। পরে সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সব অভিযুক্ত মিলে শিক্ষক আবদুর রহমানকে দোকানের একটি খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বাঁধেন। এরপর তাকে হেনস্তা ও বেধড়ক মারধর করেন।
ভুক্তভোগী আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমার মাথায় ও দু’চোখে গুরুতর আঘাত পেয়েছি। চোখে আমি ভালোভাবে দেখছি না। পাশাপাশি মাথায়ও বেশি যন্ত্রণা হচ্ছে। আজ সকালে মাথার সিটিস্ক্যান ও চোখের পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, মাথা ও চোখের সমস্যা গুরুতর। ভাগ্য খারাপ হলে চোখ নষ্ট ও ব্রেনেরও সমস্যা হতে পারে। যারা আমাকে আঘাত করে আমার পরিবারের সদস্যদের এতিম করতে চেয়েছে, তাদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’
তিনি বলেন, বলেন, ‘অভিযুক্তরা সবাই মিলে আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক একটি খালি স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টা করেছিল। আমি স্বাক্ষর না দেওয়ায় অভিযুক্তরা আমাকে জনসম্মুখে একটি দোকানের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে প্রথমে হেনস্তা করেন। এরপর তারা আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা সেখান থেকে আমাকে উদ্ধার করেন। তারা আমার চোখে আঘাত করেছে। বর্তমানে আমি দুটি চোখে ভাল করে দেখছি না। মামলা করলে তারা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ ঘটনার ভাইরাল হওয়া ভিডিও’র ব্যাখ্যা দিয়ে অভিযুক্ত মুসলিম উদ্দিন হিরু তার নিজস্ব ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে এক পোস্টে লেখেন, ‘শিক্ষক আবদুর রহমানের ১২ ভাই-বোন। তারা আমাদের নিকট কিছু জায়গা বিক্রি করেছিল। তাদের মধ্যে ১০ জন ইতোমধ্যে আমাদের রেজিস্ট্রি দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষক আবদুর রহমান ওই জায়গায় তার অংশটুকু বিক্রি করেননি। তবে তিনি তার মূল জায়গা থেকে কয়েকগুণ বেশি দখল করে রেখেছেন।’
তিনি আরও লিখেন, ‘এ বিষয়ে তাকে ১০ থেকে ১৫ বার বলেছি। কিন্তু তিনি বিষয়টি কানে নেননি। ঘটনার দিন তিনি দোকানে এসেছিলেন। তখন এ বিষয়ে আমার বাবা তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে, তিনি আমার বাবাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। আমার বাবা আঘাত পাওয়ার পরে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমরা তাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখি। পরে তার সাথে আমাদের হাতাহাতি হয়।’
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সাতকানিয়ার ঢেমশা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেন, ‘জায়গায় বিরোধ থাকলে সেটা আইনগতভাবে অথবা বৈঠক বসে সমাধান করা যেত। তবে একজন শিক্ষককে এভাবে প্রকাশ্যে খুঁটির সাথে বেঁধে মারধরের মাধ্যমে হেনস্তা করা মোটেই উচিত হয়নি। এ ঘটনা শুধু এ শিক্ষককে আঘাত নয়, পুরো শিক্ষক জাতিকে অপমান ও অসম্মান করার সমতুল্য। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া জরুরি।’
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘গাছের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক শিক্ষককে মারধরের বিষয়টি আমিও ফেসবুকে দেখেছি। ঘটনাটি খুবই নিন্দনীয়।’
তিনি বলেন, ‘ভিকটিম শিক্ষক থানায় অভিযোগ দিয়েছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। থানার ওসিকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে বলেছি।’
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকের স্ত্রী রোকসানা আক্তার বাদি থানায় একটি মামলা করেছেন। এ ঘটনায় হান্নান ও বক্কর নামে দুই এজাহারনামীয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সোমবার (৩০ জুন) সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’
সারাদেশ
মানিকগঞ্জে নিজের ৯ বছরের মেয়েকে ধর্ষণ মামলার রায়ে বাবার মৃত্যুদণ্ড
সারাদেশ
মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে রেস্তোরাঁয় এসে পটিয়ার আ.লীগ নেতা আটক
সারাদেশ
যশোরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি মুর্যাল ভেঙে নির্মিত হচ্ছে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিসৌধ’
সারাদেশ
হাসিনার বুলেট থামাতে পারেনি, বিএনপির পাথরও পারবে না : রাফি
সারাদেশ
হাত-পা নেই, মুখ দিয়ে লিখে জিপিএ-৫ পেলেন লিতুন
সারাদেশ
রিকশাচালকের টাকা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদ করায় রকিকে হত্যা করা হয় : পুলিশ
সারাদেশ
ফেনীতে বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ৩০ গ্রাম
সারাদেশ
গাজীপুরে কনস্টেবলকে স্যার ডেকে ধরা পড়লেন ভুয়া নারী এসআই
সারাদেশ
গাজীপুরে কাঁচাবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, পুড়ল অনেক দোকান
সারাদেশ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মসজিদ থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার