১৫ই জুলাই, ২০২৫

৩১শে আষাঢ়, ১৪৩২

২০শে মুহাররম, ১৪৪৭

মঙ্গলবার

Shilpo Bangla Logo
FacebookYouTubeTelegram

জাতীয়

সাভার

আশুলিয়া

সারাদেশ

ক্যাম্পাস

চাকরি

অর্থ-বাণিজ্য

আন্তর্জাতিক

খেলা

বিনোদন

প্রবাস

ধর্ম

স্বাস্থ্য

শিক্ষা

পরিবেশ

মনোবিজ্ঞান

সাহিত্য-সংস্কৃতি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সোশ্যাল মিডিয়া

ফ্যাক্ট চেক

মতামত

ইউটিউব

সর্বশেষ

মিটফোর্ড এলাকায় সোহাগ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নান্নু গ্রেফতার

সম্পূর্ণ নিউজ

ডেটিং অ্যাপে প্রেমের ফাঁদ : আশুলিয়ায় হানি ট্র্যাপ চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার

ঢাকার আশুলিয়ায় প্রেমের ফাঁদ পেতে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে হানি ট্র্যাপ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার। ছবি: সংগৃহীত

ডেটিং অ্যাপে প্রেমের ফাঁদ : আশুলিয়ায় হানি ট্র্যাপ চক্রের ২ সদস্য গ্রেফতার

রিপোর্টার: রিফাত বিল্লাহ,প্রকাশ: ২৬ জুন, ২০২৫ এ ১০:১৩ PM

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় প্রেমের ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে মারধর ও টাকা আদায়ের অভিযোগে করা মামলায় এক তরুণীসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। 

 

বুধবার (২৫ জুন) আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

 

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মুন্সিরচর গিমাডাঙ্গা এলাকার ইয়াছিন শেখ (২৫) ও মাগুরা সদরের শিমুলিয়া এলাকার সুমাইয়া জান্নাত ওরফে সুমি আক্তার (২৫)। তারা আশুলিয়ার জামগড়ার শিমুলতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।


মামলার বাদী ভুক্তভোগী পলাশ হোসেনের (২৫) বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের পেচুয়াধারা এলাকায়। তিনি থাকেন রাজধানীর মিরপুরে।

 

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিনুর কবির।

 

সংবাদ সম্মেলনে শাহিনুর কবির জানান, সম্প্রতি ‘টানটান’ নামে একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে বাদীর সঙ্গে সুমির পরিচয় হয়। ওই তরুণী তাকে সম্প্রতি আশুলিয়ার জামগড়া এলাকায় দেখা করতে বলেন। পরে ২০ জুন রাত ৯টার দিকে তিনি আশুলিয়ায় যান। একপর্যায়ে সুমির নির্দেশনায় তিনি আশুলিয়ার চিত্রাশাইল এলাকায় তিনতলা একটি ভবনের নিচে মোটরসাইকেল রেখে ছাদে যান। সেখানে বাদীকে আটকে মারধর করেন সুমি ও ইয়াছিন। সেখানে তারা বাদীকে অশ্লীল ভিডিও ধারণের ভয় দেখিয়ে একপর্যায়ে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে তারা মুক্তিপণ হিসেবে ১২ হাজার ৭০০ টাকা, একটি আইফোন, ইস্টার্ন ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে নেন। 

 

পরে ২১ জুন রাতে অচেতন অবস্থায় বাদীকে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে রেখে যায় প্রতারক চক্রটি। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসা শেষে এ ঘটনায় ২৫ জুন আশুলিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন বাদী।

 

সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে এই দুই ব্যক্তির প্রতারণা এবং অপহরণ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। চক্রে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ 

 

পুলিশের দাবি, ইয়াছিন ও সুমি দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মানুষজনকে জিম্মি করেন। পরে মারধর ও চাঁদা আদায় করেন। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতারের পাশাপাশি বাদীর মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করা হয়েছে। আটক দুই আসামির বিরুদ্ধে একাধিক থানায় পূর্বেও মামলা রয়েছে। তারা সংঘবদ্ধভাবে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অপরাধে জড়িত। অন্য অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে। 

 

পুলিশ সাধারণ মানুষকে অপরিচিত ব্যক্তিদের সাথে অনলাইনে পরিচিত হওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকার পাশাপাশি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ এবং তথ্য শেয়ার করার আগে আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

 

ডেটিং অ্যাপে ভয়াবহ প্রতারণা

 

টিন্ডার, বাম্বল, ওকেকিউপিডের বেশি জনপ্রিয়। এর কারণ হতে পারে, এগুলো বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। তবে প্রতারণার ভয়াবহ ফাঁদে পরিণত হয়েছে ‌এসব ‘ডেটিং অ্যাপ’। দিন দিন বেড়েই চলেছে অ্যাপভিত্তিক এ অপরাধ। অন্যের ছবি ব্যবহার করে খোলা হচ্ছে অ্যাকাউন্ট। পরে এসব ফেইক প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। শুধু তাই নয়, এর মাধ্যমে পরিচয়ের পর অপহরণের মাধ্যমেও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে অর্থ। 

 

২০২৪ সালের মে মাসের এক ঘটনায় এক ভুক্তভোগী তরুণীর জানান, তারই এক বান্ধবী ভুক্তভোগী তরুণীর  ছবি ব্যবহার করে ‘টানটান’ নামে একটি ডেটিং অ্যাপে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ডেটিংয়ের কথা বলে ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা, আবার কারও কারও কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ টাকাও। ভুয়া জন্মদিনের কথা বলে নিয়েছেন দামি উপহার।

 

 

২০২০ সালে এই  ‘টানটান’ নামে একটি ডেটিং অ্যাপ আলোচনায় আসে টলিউডের খ্যাতনামা পরিচালক রাজ চক্রবর্তীর নামে ভেরিফায়েড ভুয়া অ্যাকাউন্টের কথা সামনে আসলে। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে রাজের নাম করে নারীদের সঙ্গে গল্প জমানো হয়েছে, ফেলা হয়েছে বিভিন্ন ফাঁদে। বাংলাদেশেও অনেক তারকার নামে এই একই অপরাধ ঘটেছে, বিশেষ করে অল্প বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে, বিশেষ করে নারী পাচারকারীরা। 

 

২০২২ সালে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করে এমন আরেকটি বড় চক্রকে। 

 

টার্গেটকে অপহরণ করা কিংবা অচেনা এলাকার ফ্ল্যাটে ডাকা, এরপরে শারীরিক নির্যাতন করে আপত্তিকরভাবে চক্রের নারীদের সাথে ভিক্টিমকে জোর করে বা ছল করে কিছু ছবি ও ভিডিও করা, পরে পূর্বের ধারণকৃত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও তার আত্মীয় স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে হেয় করবে বলে হুমকি-ধমকি দিয়ে আরও টাকা দাবি করা; এইভাবেই কাজ করে এইসব চক্র। 

 

২০২১ সালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় হওয়া আরও একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম জানতে পারে ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে একটি চক্র ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অপহরণ করছে। পরে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। গ্রেফতার করা হয়েছিল তিনজনকে। তখন অন্তত বিশটি ডেটিং অ্যাপের তথ্য আসে গোয়েন্দাদের কাছে। এসব অ্যাপ বন্ধে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) চিঠিও দিয়েছিল পুলিশ। বন্ধ হয়নি একটিও।

 

ডিবি জানায়, ডেটিং অ্যাপ টিন্ডার, টানটান, মামবা ব্যবহার করে অনেক নারী পুরুষই এখন প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন। এসব অ্যাপ ঘিরে ফাঁদ পেতে রেখেছে অপহরণকারী ও প্রতারক চক্র। এসব চক্রের সদস্যরা বিভিন্নভাবে মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রত্যাশিত টাকা আদায় করতে না পারলে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলছে। 

 

ডিবি আরও জানায়, এ ধরনের অনেক চক্র ডেটিং অ্যাপ দিয়ে প্রতারণা করছে। এজন্য টিন্ডার, টানটান, মামবা, বাম্বল, হিটচ, ট্রুলিম্যাডলি, কফি মিটস বেইগেল, ওকেকিউপিড, ই-হারমোনি, ওও, ম্যাচ, হিঞ্জ, হার, গ্রাইন্ডার, ক্যুপিডের মতো ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করে সঙ্গী খোঁজার ক্ষেত্রে সচেতন হতে হবে।  

 



 

এ মুহূর্তে প্লে স্টোরে আছে প্রায় অর্ধশত অ্যাপ। প্রতিনিয়ত যোগ হচ্ছে নতুন নতুন ডেটিং অ্যাপ। এসব অ্যাপ যতটা না জীবনসঙ্গী খোঁজার, তার চেয়ে বেশি পাতা প্রেমের ফাঁদ। এ ফাঁদে পা দিয়ে নিঃস্ব হওয়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। আর সম্প্রতি ফেইক প্রোফাইলিংয়ের ঘটনা বাড়ছে, যা উদ্বেগজনক বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

এ বিষয়ে সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে ব্যক্তি সতর্কতা জরুরি। অর্থাৎ, ব্যক্তি তার নিজস্ব অবস্থান অথবা তার পেশাগত মর্যাদার জায়গা থেকে যে কারও সঙ্গে অল্পতেই বন্ধুত্ব তৈরি কিংবা সেই বন্ধুত্ব থেকে অন্তরঙ্গ হওয়ার জন্য আগ্রহ তৈরি করবে না। এখানে অনৈতিকতার প্রশ্নও আছে। তাই এ বিষয়গুলোতে সতর্ক থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব তৈরি বিষয়গুলোতে চিন্তাভাবনা করে অগ্রসর হতে হবে। এতে করে প্রতারিত হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হবে না।’ 

 

এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, ‘সরকার থেকে এই বিষয়টিকে শক্তভাবে নজরদারি না করা হলে সমস্যা ক্রমশ বাড়বে। যদি ঐ প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকার বলে দেয় যে আমার দেশের এই বয়সের কম নাগরিকদেরকে ডেটিং অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে তোমরা অনুমতি দিতে পারবে না, কেবল তখন সেটা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তখন ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা এই ট্র্যাপে পড়বে না।’

 

ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করে ফিজিক্যাল ইন্টিমেসির আশায় বড় ঝুঁকি নেওয়া 

 

ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারকারীদের মতে, অসতর্ক হলে ডেটিং অ্যাপের কারণে ‘নিশ্চিত বিপদ’ এর মাঝে পড়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ, স্ক্রিনের ওপাশের মানুষটা নারী নাকি পুরুষ, ছবি দেখে সেটা যাচাই-বাছাই করার কোনও উপায় নেই।

 

আরেকটা ঝুঁকি হলো, ব্যবহারকারীদের অনেকে নিজেদের অন্তরঙ্গ ছবি আদানপ্রদান করে।

 

এজন্য তারা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে স্ন্যাপচ্যাট। কারণ, স্ন্যাপচ্যাটে পাঠানো কোনও ছবি বা মেসেজ একবার দেখার পর তা অটোমেটিক্যালি ভ্যানিশ হয়ে যায়। এমনকি, কেউ স্ক্রিনশট নিলেও সেটা লেখা থাকে। কিন্তু অপর পাশের ব্যক্তির কাছে যদি আরেকটা ফোন থাকে, তাহলে সে সেটা দিয়ে ছবি তুলে রাখতে পারে। পরে এই ইন্টিমেট ছবির জন্য ব্ল্যাকমেইলড হতে হয় অনেকেই। 

 

 ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারকারী বাংলাদেশিদের অভিজ্ঞতা 

 

ডেটিং অ্যাপ বাম্বল ব্যবহারকারী এক নারী বলেন, সিরিয়াস রিলেশনশিপের জন্য ডেটিং অ্যাপের ওপর নির্ভর করা উচিৎ না। যারা ক্যাজুয়াল ডেটিং পছন্দ করে, ওদের জন্য ডেটিং অ্যাপ ভালো। আমি মাত্র দু’জনকে পেয়েছিলাম। কিন্তু তাদের কারও সাথে শেষ পর্যন্ত টিকেনি। কারণ আমি সিরিয়াস রিলেশনশিপ চাচ্ছিলাম, ওদের কেউই তা চাচ্ছিলো না। দে আর লুকিং ফর আদার উইমেন।’ 

 

ডেটিং অ্যাপ সম্পর্কে এই নারীর পর্যবেক্ষণ হলো, ডেটিং অ্যাপগুলোতে যাদের বয়স ৩০ বছরের কম, তাদের অধিকাংশের উদ্দেশ্য হলো শারীরিক অন্তরঙ্গতা। আর যাদের বয়স ত্রিশের বেশি, তারা আবার বিয়ের জন্য মেয়ে খোঁজেন।

 

ডেটিং অ্যাপ টিন্ডার ব্যবহারকারী এক নারী বলেন,’বাংলাদেশের মানুষ ডেটিং অ্যাপের কনসেপ্টটাই বুঝে না। এখানে তো বলাই আছে যে এটা একটা হুক-আপ অ্যাপ, ক্যাজুয়াল ডেটের জন্য। কিন্তু মানুষ ভাবে এটা বিয়ে করার অ্যাপ।’ 

 

তিনি আরও বলেন, ‘সবাই যে সেক্সের জন্যই টিন্ডার ব্যবহার করে, তা না। তবে হ্যাঁ, টিন্ডারে যদি কেউ সেক্সের প্রপোজাল দেয়, তাহলে সেটাকে অ্যাবনরমাল মনে করার কিছু নাই। কারণ টিন্ডার থেকে সিরিয়াস বা কাটকাট সম্পর্ক আশা করার কিছু নাই।’ 

 

ডেটিং অ্যাপ টানটান ব্যবহারকারী এক পুরুষ বলেন, ‘ডেটিং অ্যাপগুলো মূল হুক আপ করার জন্যই। ছেলে-মেয়ে সবাই, বিশেষ করে ছেলেরা একধরনের সেক্সুয়াল এ্যাডভান্টেজ নেয়ার জন্য এটা ব্যবহার করে। আমি গবেষণার সময় দেখেছি যে প্রপোজাল ছেলেরাই বেশি দেয়। যেমন, তারা বলে যে ঐ জায়গায় ট্রিপে যাবো। মূল লক্ষ্য, নিজেদের সেক্সুয়াল চাহিদা মিট করা।’ 

 

সমাজবিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে কেন ডেটিং অ্যাপের দিকে ঝুঁকছে তরুণ-তরুণীরা

 

সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের মাঝে অনলাইনবেজড সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রবণতা বেশি। এর কারণ হিসেবে তারা মনে করেন, এই প্রজন্মের অনেকে ভালো লাগার কথা সামনাসামনি বলতে হয়তো পছন্দ করে না। এছাড়া, যারা চরিত্রগতভাবে ইন্ট্রোভার্ট বা অন্তর্মুখী, তারা অনলাইন থেকে সঙ্গী খুঁজে নিতে চায়। সামনাসামনি দেখা করতে গেলে বেশি সময় দিতে হয় বলেও অনেক অনলাইনে সম্পর্ক গড়েন।

 

 

কেন ডেটিং অ্যাপের দিকে ঝুঁকছে তরুণ-তরুণীরা এমন প্রশ্নের জবাবে সমাজবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন বলেন, ‘বিশ্বায়নের প্রভাবে একেকটা গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে সমাজ যেহেতু পরিবর্তনশীল, আমাদের সমাজেও আস্তে আস্তে অনেক পরিবর্তন আসছে।’

 

তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বে ৩০/৩৫ বছর আগে থেকে এটা চালু হয়েছে। সেখানে অ্যাপসের মাধ্যমে চেনাজানা হয়, সম্পর্ক তৈরি হয়।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘তবে পশ্চিমা বিশ্বের তুলনায় আমাদের এইখানে একটু পার্থক্য আছে। আমাদের সোসাইটি তাদের মতো অতটা বিচ্ছিন্ন নয়। তাদের (পশ্চিমা) মতো হয়তো শুধু সম্পর্ক তৈরি করা আমাদের এখানে মুখ্য হবে না। এখানে হয়তো অনলাইনে চেনাজানা হবে, কিন্তু মূল লক্ষ্য হবে হয়তো একটি সম্পর্কে পরিণত সম্পর্কে পরিণত করা।’

 

অন্যদিকে, এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সালমা আক্তার বলেন ‘একটা সমাজে থেকে একই মানুষ প্রকাশ্যে একাধিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পারে না। যদি কেউ করে, তাহলে সেটি সোশ্যাল কনসার্ন হয়ে যায়। কিন্তু অনলাইনে এই ঝামেলা নেই। কারণ সেখানে তথ্য লুকানো যায়। এবং, একজন মানুষের একই সাথে কতজনের সাথে সম্পর্ক আছে, সেটি কেউ জানতে পারে না। মূলত এই একাধিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্যও মানুষ এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করে।’ 

 

পরিবারের সাথে বন্ধন কমাও ডেটিং অ্যাপ ব্যবহার করার কারণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনকার ছেলেমেয়েরা যেভাবে বড় হয়, তাতে তারা পরিবারের সাথে যুক্ত না। আগে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ হতো। কিন্তু এখন বিয়ের কথা বললে বাচ্চারা তাদের বাবা-মাকে বলে, এটা বলার তোমরা কে? এখনকার বাচ্চাদের সম্পর্কগুলো অনেক বেশি ইন্টারপারসোনাল। তাদের কাছে রিলেশনশপ মানেই সেটা লং টার্ম না, রিলেশনশিপ মানেই বিয়ের সিদ্ধান্ত না।’

 

তিনি আরও বলেন, 'এখনকার বাচ্চারা আশেপাশে প্রচুর ডিভোর্স হতে দেখছে। ফলে এগুলো দেখে হয়তো তাদের মনে হয়, ফ্যামিলি বলে কিছু নাই, কমিটমেন্ট বলে কিছু নাই। এইসব ডিভোর্স, ব্রেকআপের ঘটনাগুলো দ্বারা বাচ্চারা কোথাও একটা গিয়ে ইনফ্লুয়েন্স হচ্ছে।’ 

 

বিশ্বাসহীনতা দায়ী করে এই অধ্যাপক বলেন, ‘এখনকার ছেলেমেয়েদের মাঝে পারস্পরিক বিশ্বাস কমে গেছে। ছেলে ও মেয়ে উভয়ই মনে করছে, তার পার্টনারের অনেক সম্পর্ক আছে। অথচ, লং টার্ম রিলেশনশিপের ভিত হলো বিশ্বাস।’ 

 

মিডিয়ার ভূমিকাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘বিয়ে বা প্রেম ভেঙ্গে যাওয়া; এগুলোকে মিডিয়াতে এতো হালকাভাবে দেখানো হচ্ছে যে তরুণরা এগুলোকে এটাকে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ধরে নিয়ে বড় হচ্ছে।’ 

সাভারআশুলিয়াপ্রতারণাপ্রেমের ফাঁদডেটিং অ্যাপসাইবার বুলিংপ্রযুক্তিসোশ্যাল মিডিয়াসাইবার ক্রাইম
সাম্প্রতিক খবর
আশুলিয়ায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুনে পুড়ল ৫ বসতঘর ও গ্যারেজ

আশুলিয়া

আশুলিয়ায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুনে পুড়ল ৫ বসতঘর ও গ্যারেজ

আশুলিয়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, গ্রেফতার ১

আশুলিয়া

আশুলিয়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, গ্রেফতার ১

আশুলিয়ায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, ৪ গার্মেন্টস কর্মী দগ্ধ

আশুলিয়া

আশুলিয়ায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, ৪ গার্মেন্টস কর্মী দগ্ধ

আশুলিয়ায় সেফটি ট্যাংকির ভিতর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

আশুলিয়া

আশুলিয়ায় সেফটি ট্যাংকির ভিতর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার

সরকারি ২ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতায় আশুলিয়ায় সড়কে 'মরণফাঁদ', উল্টে যাচ্ছে যান, দায় চাপাচ্ছে একে অন্যের উপর

আশুলিয়া

সরকারি ২ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতায় আশুলিয়ায় সড়কে 'মরণফাঁদ', উল্টে যাচ্ছে যান, দায় চাপাচ্ছে একে অন্যের উপর

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

আশুলিয়া

আশুলিয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন

আশুলিয়ায় কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু

আশুলিয়া

আশুলিয়ায় কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশুর মৃত্যু

১৭ বছর পর আশুলিয়া থেকে আসামি গ্রেফতার

আশুলিয়া

১৭ বছর পর আশুলিয়া থেকে আসামি গ্রেফতার

আশুলিয়ায় চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের যুদ্ধ ঘোষণা

আশুলিয়া

আশুলিয়ায় চাঁদাবাজি বন্ধে পুলিশের যুদ্ধ ঘোষণা

৯ দিন ধরে আশুলিয়া সাব-রেজিস্টার কার্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ, সাব-রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি

আশুলিয়া

৯ দিন ধরে আশুলিয়া সাব-রেজিস্টার কার্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ, সাব-রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি