সেই স্থানীয় যুবক আল মামুন হৃদয় বলেন, ‘গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে মাজারের পাশে মোটরসাইকেলচালকের সঙ্গে এক ব্যক্তির বাগ্‌বিতণ্ডা শুনে এগিয়ে যাই আমিসহ কয়েকজন। তখন অভিনেতা সমু চৌধুরীকে চিনে ফেলি। মোটরসাইকেলচালককে ভাড়া না দেওয়ায় সমু চৌধুরীর সঙ্গে তার বাগ্‌বিতণ্ডা চলছিল। মোটরসাইকেলচালক বলছিলেন, ঢাকা থেকে তাকে এখানে নিয়ে এসেছেন। সমু চৌধুরী এ সময় খালি গায়ে ছিলেন। পরনে ছিল ট্রাউজার, সঙ্গে ছিল একটি ব্যাগ। এ সময় অভিনেতার আচরণে তাকে সুস্থ মনে হয়নি। পরে আমরা মোটরসাইকেলচালককে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দিই।’

পরে ছবি পোস্টের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, 'সমু চৌধুরীকে মানসিক ভারসাম্যহীন ভেবে তাকে তার পরিচিতদের হাতে তুলে দিতে আমি তার ছবি তুলে পোস্ট দেই।'

তিনি আরও বলেন, 'পরে সমু চৌধুরীর সাথে কথা বলে আমার মনে হয়েছে আমি ভুল ছিলাম। সমু চৌধুরী মানসিক ভারসাম্যহীন নন।' 

তিনি বলেন, 'বুধবার রাতে সমু চৌধুরী মাজারের ফকিরদের সঙ্গেই ছিলেন। পুলিশ এসেছে অভিনেতাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য, কিন্তু তিনি যাচ্ছেন না।'

তিনি আরও জানান, 'বৃহস্পতিবার দুপুরের পর অভিনেতা সমু চৌধুরীকে স্থানীয় লোকজন নতুন লুঙ্গি দিয়েছেন। সেটি পরেই তিনি মাজারের পাগলদের সঙ্গে কথা বলছেন, ঘুরছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। মাজারের ফকিরদের বাইরে অন্যদের সঙ্গে সমু চৌধুরী কথা বলতে চান না।' 

মাজারের খাদেম শাহ মোহাম্মদ ফাহাদ ফকির বলেন, 'এ মাজারে সমু চৌধুরীকে আগে কখনো দেখেননি। তবে তিনি এখন মাজারে সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকছেন।' 

উদ্ধারের পরে অভিনেতা সমু চৌধুরীকে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে বলতে শোনা যায় যে, মানুষের মাঝে যে সরলতা তা নদী ও পাহাড়ের মানুষের কাছে এসে পাওয়া যায়। এইখানের মানুষের মধ্যে শহরের জটিলতা নেই। এইরকম একটা জায়গায় পাগলের মেলায় এসে তার খুব ভালো লেগেছে। 

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বৃহস্পতিবার রাতে গফরগাঁও উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন নিশ্চিত করেন যে, অভিনেতা সমু চৌধুরী মানসিক ভারসাম্যহীন নন।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, 'অভিনেতা সমু চৌধুরী একজন মাজার ভক্ত মানুষ। তিনি নিজেই আমাদেরকে নিশ্চিত করেছেন এর আগেও অনেকবার তিনি এই মাজারে এসেছেন। এই এলাকার রাস্তাঘাটও তিনি ভালো করে চেনেন। তার বাড়ি যশোর জেলায়। তিনি পরিবারসহ ঢাকায় থাকেন। গতকাল সোহরাওয়ার্দী এলাকা থেকে তিনি এই মাজারের উদ্দেশে রওনা দেন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানের মাজার ভ্রমণ করেন।'